নাটোর প্রতিনিধি ২৬ জানুয়ারি, ২০২১, ১৭:৪৭:৩০
ছবি : ইন্টারনেট।
নাটোর: জেলার চলনবিলের বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনে বোরো ধানের আগাম চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ১৫০ জন কৃষকের ১৫০ বিঘা জমিতে এ সমলয় চাষাবাদ স্কিম গড়ে তোলা হয়। এ লক্ষে একটি প্রকল্পও চালু করেছে সরকার। প্রকল্পের উদ্দেশ্য কৃষকদের সংগঠিত করে নতুন-নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে কৃষকদের মেলবন্ধন তৈরি করা। এ জন্য কৃষকদের ১২ লক্ষাধিক টাকা প্রণোদনা প্রদান করছে সরকার।
গত সোমবার হালতি বিলের পূর্ব মাধনগর এলাকায় রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে ধানের চারা রোপণ কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করতে বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মীরা উপস্থিত হন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার, নাটোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মেহেদুল ইসলাম, নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. ফৌজিয়া ফেরদৌস প্রমুখ।
দেখা গেছে, ট্রেতে পলিথিন মোড়ানো হাউজে পরম যত্নে তৈরি করা বীজতলা মাত্র ২২ দিনে চারা রোপণের উপযোগী হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ চারাগুলো রোপণ করা হচ্ছে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে। রোপণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে লাইন লোগো পদ্ধতি। যাতে করে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসে বেড়ে ওঠে ধানের চারা, সুবিধা হয় পরিচর্যার।
পরবর্তীতে পোকা-মাকড়ের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহার করা হবে পার্চিং, খরচ কমাতে ব্যবহার করা হবে আধুনিক সেচের পর্যায়ক্রমিক শুষ্ক ও ভেজা পদ্ধতি। সার ব্যবহার যথাযথ ও সীমিত করতে ব্যবহার করা হবে সুষম সার, অনায়াসে আগাছা নিধনে থাকবে উইডার মেশিন এবং সব মিলিয়ে যুগপৎভাবে ধান কর্তন, মাড়াই এবং প্যাকিং কাজে ব্যবহার করা হবে কম্বাইন্ড হারভেস্টার।
কৃষকের জমি এবং সেচের খরচ ছাড়াও এই প্রণোদনা কার্যক্রমে ধানের বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে সমস্ত ব্যয় নির্বাহ করছে সরকার। নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি পূণর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে পাইলট স্কীমের এই কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে কৃষি বিভাগ।
সুবিধাভোগী কৃষক আব্দুস সোবহান বলেন, আমরা বীজতলা থেকে মাত্র ২২ দিনে চারা রোপণ করতে পারছি। সতেজ চারাগুলো মেশিনে রোপণের ফলে আহত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে খুব সহজেই জমিতে মানিয়ে যাবে। বেশি সময় জমিতে থাকায় পূর্ণ পুষ্টি পেয়ে ধানের কুশির সংখ্যা বাড়বে, ধানও হবে বেশি।
অপর কৃষক আবুল কাশেম জানান, প্রতিবছর এলাকাতে বন্যা দেখা দেয়। ফলে ধান ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনাসহ ওই সময় ধান কাটা শ্রমিকের অভাব এবং উচ্চ মূল্য দিয়ে সমস্যার মুখোমুখী হতে হয় আমাদের। যান্ত্রিকীকরণের ফলে ওইসব সমস্যা থেকে আমরা রক্ষা পাবো বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. ফৌজিয়া ফেরদৌস বলেন, সকল প্রযুক্তির সমাহারে গড়ে তোলা এই স্কিমকে সফল এবং মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে কৃষি বিভাগ সব রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জানান, সমবায়ের মডেল অনুসরণ করে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং সকল প্রযুক্তির সঙ্গে কৃষকের মেলবন্ধন তৈরিতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। আশাকরি পাইলট এই স্কিম সফলতা লাভ করবে। ভবিষ্যতে জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও এই কর্মসূচি ছড়িয়ে পড়বে।
নিউজজি/ এসআই