নিউজজি ডেস্ক ১৯ জুন , ২০২২, ২০:৩৪:৪৬
প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরে বাতিঘর
ঢাকা : ১৮ বছরে পা রাখলো দেশের বৃহত্তর বই বিপণন ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান 'বাতিঘর'। প্রতিষ্ঠাবির্ষিকী উপলক্ষ্যে শনিবার (১৮ জুন) ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাঠক, লেখক ও শুভানুধ্যায়ীদের স্বাগত জানায় বাতিঘর কর্তৃপক্ষ। এদিন অসংখ্য শিশু-কিশোরের পদচারণায় মুখর ছিল বাতিঘর। পরে মুক্ত আলাপ ও সাস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এসময় সকলের কাছে বই পৌঁছানোর পাশাপাশি অষ্টাদশী এই প্রতিষ্ঠানটি সাংস্কৃতিক চেতনাসমৃদ্ধ জ্ঞানের যোগান দিতে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেন বিশিষ্টজনরা।
মুক্ত আলাপে অংশ নিয়ে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, 'বই যেদিন থাকবে না, মানব সভ্যতা সেদিন একেবারে ধসে পড়বে। বাংলাদেশের বইয়ের জগতটা ঢাকার অমর একুশে বইমেলা কেন্দ্রিক। মানুষের কাছে বই পৌঁছানোর এটাই যেন একমাত্র মাধ্যম। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু নেই। বই থাকতে হবে প্রতিটি জেলা শহরে, উপজেলায়, গ্রামে। সেটা কীভাবে করা যায় সে উপায় আমাদের বের করতে হবে'।
এসময় তিনি বলেন, 'দেশে এখন বইয়ের ক্রেতা আছে তবে পাঠক খুব কম। পাবলিক লাইব্রেরিগুলোতে এখন সবাই এসে চাকরির পড়া পড়ে। আর ঠিক তার উল্টোটি, অর্থাৎ প্রকৃত পাঠকরা আসে বাতিঘরে। ভালোবাসা থেকে এদেশের প্রত্যেকটি বাড়িতে যেদিন লাইব্রেরি গড়ে উঠবে, সেদিনই আমাদের প্রকৃত সোনার বাংলা গড়ে উঠবে'।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ আরো বলেন, 'বাতিঘর সারাদেশের পাঠকের কাছে বই পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে ভূমিকা রাখছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বড় শহরগুলোয় বাতিঘর বিক্রয়কেন্দ্র খুলছে। আলাদা প্রকাশনা করে মানুষকে ভালো ভালো বই পৌঁছে দিচ্ছে। আমি চাই এটা সব শহরে, সব উপজেলায়, সব গ্রামেও ছড়িয়ে পড়ুক। বাতিঘর শুধুই একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়। একটা মহৎ লক্ষ্যও বাতিঘরের আছে বলে আমি বিশ্বাস করি'।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বাতিঘরকে আরো শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাবেক সংস্কৃতি সচিব আকতারী মমতাজ, কবি ফরহাদ মজহার, নারীনেত্রী ফরিদা আখতার, অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফা, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শামীম আল মামুন, গবেষক আলতাফ পারভেজ, তানজিনা হোসেন, আবদুল্লাহ আল ইমরান, সাংবাদিক সোহরাব হাসান, কথাশিল্পী ফারুক মঈনউদ্দীন, পারভেজ হোসেন, কবি তুষার দাশ, আফতাব আহমদ, সাজ্জাদ শরিফ, শোয়াইব জিবরান, চঞ্চল আশরাফ, আলফ্রেড খোকন, জুয়েল মোস্তাফিজ, শিল্পী সব্যসাচী মিস্ত্রী, সানজিদা পারভীন তিন্নিসহ অনেকে।
এছাড়া প্রকাশকদের মধ্যে আগামী প্রকশানীর প্রকাশক ওসমান গণি, কাকলী প্রকাশনীরর এ কে নাসির আহমেদ, অনুপম প্রকাশনীর মিলন নাথ, প্যাপিরাসের মোতাহার হোসেন, সুবর্ণ প্রকাশিনীর শাহরিন হক, পলল প্রকাশনীর খান মাহবুব বাতিঘরকে শুভেচ্ছা জানান।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ১৭ই জুন চট্টগ্রাম শহরের চেরাগি পাহাড় মোড়ে ছোট্ট একটা ঘরে বাতিঘর যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেটে বড় পরিসরে এবং ঢাকার শাহবাগ ও বাংলাবাজারে ছোট পরিসরে বাতিঘরের শাখা আছে। রাজশাহী শহরের প্রাণকেন্দ্র ঘোড়ামারায় বড় পরিসরে বাতিঘর প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। দেশে-বিদেশে যেকোনো জায়গায় বই পাঠানোর জন্য baatighar.com এর মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছে অনলাইন বাতিঘর। এছাড়া ২০০৯ সালে প্রকাশনা সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাতিঘর। ইতোমধ্যে বাতিঘর প্রকাশ করেছে প্রায় ৩শ' বই।