নিউজজি ডেস্ক ২০ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯, ১০:২৬:৩৯
নদীর নাম সুবর্ণরেখা
পৃথিবীর সব নদীই সুন্দর। জলের মতো সুন্দর আর কী হতে পারে? সর্বগ্রাসী হলেও নদীকেই মানুষ আপন ভাবে, নদীর কোলেই গড়ে তোলে নিজেদের আবাস। আমাদের এই উপমহাদেশের নদীগুলো ইতিহাস ঐতিহ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতবর্ষের নদীগুলোর মধ্যে সুবর্ণরেখা নদীটি খুবই বিখ্যাত।
সুবর্ণরেখা নদী বিষয়ে ‘মেদিনীপুরের ইতিহাস’ বইয়ে এভাবেই উল্লেখ আছে -
‘বাঙ্গালার শেষ নবাবদিগের আমলে সুবর্ণরেখা নদী উড়িষ্যার উত্তরসীমা বলিয়া নির্দিষ্ট হইত। সে সময় মহারাষ্ট্রীয়গণ সুবর্ণরেখা নদী পর্য্যন্ত ভূমিখণ্ডকে উড়িষ্যার অন্তর্গত বলিয়া অধিকার করিত; কিন্তু সুবর্ণরেখা ও রূপনারায়ণের মধ্যবর্ত্তী মেদিনীপুর প্রদেশটি তখনও কাগজে-কলমে উড়িষ্যারাজ্য বলিয়াই পরিচিত হইত। কোম্পানীর অধিকারের প্রারম্ভেও সুবর্ণরেখা ও রূপনারায়ণ নদীর মধ্যবর্ত্তী চাক্লী মেদিনীপুর বিভাগটি উড়িষ্যার অন্তর্গত ছিল; পরবর্ত্তিকালে ঐ বিভাগ বঙ্গদেশের অন্তভূর্ত হইয়াছে’।
সুবর্ণরেখা নদী রাঁচির কাছ থেকে উৎপন্ন হয় ঝাড়খন্ড, পশ্চিমবঙ্গ ও ঊড়িষ্যার রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ঊড়িষার তালচের এর কাছে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।
এই নদীতীরের বালুচরে অনেক সময় স্বর্ণরেনু পাওয়া যায়। সেই কারনে নদীটিকে সুবর্ণরেখা বলা হয়, অর্থাৎ সোনার রেখা। বহু মানুষ নদীর বালি ছেঁকে সোনা অন্বেষন করেন। মূলত এভাবেও অনেক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে।
নদীটি রাঁচির কাছে হুডু জলপ্রপাত থেকে উৎপন্ন হয়ে ঝাড়খন্ডের সিঙভূম জেলা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদীনিপুর জেলা হয়ে ঊড়িষায় প্রবেশ করে। এরপর এটি বঙ্গোপসাগরে মেশে। এই নদীর মোট দৈর্ঘ্য হল ৩৯৫ কিমি।
রাঁচির কাছে এই হুডু বা হুড্রু জলপ্রপাতটি অবস্থিত । এখানে প্রতিবছর বহু পর্যটক আসে জলপ্রপাতটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে। এটি রাঁচি তথা ঝাড়খন্ডের বিখ্যাত একটি পর্যটন কেন্দ্র। সুবর্ণরেখা নদীর তীরে তামা খনি শহর ঘাটশিলা অপর একটি পরিচিত পর্যটন স্থান।
ছবি ও তথ্য – ইন্টারনেট