নিউজজি প্রতিবেদক ৯ মার্চ , ২০১৯, ১৫:৩২:৫৬
ছবি: রাকিব হাসান
আকন্দ এশিয়ার উষ্ণ অঞ্চল আদি গুল্ম, তবে আফ্রিকায়ও এ গাছ পাওয়া যায়। আমাদের দেশের প্রায় সমস্ত জায়গায় আকন্দ গাছ জন্মাতে দেখা যায়। আকন্দ মাঝারি ধরনের গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এরা উচ্চতায় ২ থেকে ৮ মিটার হয়ে থাকে। শক্ত কাণ্ড, সাদাটে রঙের লোমশযুক্ত কচি ডাল।
৪ থেকে ৮ ইঞ্চি আকৃতির বড় পতা। পাতার স্পষ্ট শিরা-উপশিরা, উপরিভাগ মসৃণ এবং পাতার নীচের অংশে তুলোর মতো সাদাটে লোমশ। গাছের পাতা, পাতার বোঁটা ও শাখা-প্রশাখা ভাঙলে দুধের মতো সাদা আঠা বা কষ বের হয়। শ্বেত আকন্দ ও লাল আকন্দ নামে দু ধরনের আকন্দ আমাদের দেশে দেখা যায়। শ্বেত আকন্দের ফুলের রং সাদা এবং লাল আকন্দের ফুলের রং বেগুনি।
আকন্দগাছে প্রায় সারা বছর জুড়ে ফুল ফুটতে দেখা যায়, তবে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকাল ফুল ফোটার প্রকৃত সময়। তখন প্রজাপতি ও মৌমাছিসহ অন্যান্য পতঙ্গের আনাগোনা লক্ষ করা যায়। ফুলের পাঁচটি পাপড়ি, মাঝে পাঁচটি খাঁজে বিভক্ত পুংদণ্ড ও গর্ভমুক্ত অবস্থিত। প্রায় প্রতি শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে বোঁটায় থোকা থোকা ফুল ফোটে ও পাতার কক্ষ থেকে ফুলের বোঁটা বের হয়। ফুল শেষে গাছে ফল হয়, গাছে একত্রে এক বা একাধিক ফল ধরে। ফলের রং সবুজ, অগ্রভাগ বাঁকা, তাই গাছে ধরা ফল দেখতে ছোট পাখির মতো দেখায়। ফলের ভেতর তুলা হয় এবং এর মধ্যে কালচে রঙের বীজ থাকে। ফল পাকে জুলাই-আগস্ট মাসে। বীজ, সাকার ও ডাল কাটিংয়ের মাধ্যমে আকন্দের বংশ বিস্তার করা যায়।
বহুগুণে গুণান্বিত আকন্দগাছের ফুল, পাতা, আঠা, শিকড়, কাণ্ড বিভিন্ন চিকিত্সায় ব্যবহূত হয়। চুলের রোগ, ব্যথা সারাতে, হাঁপানি ও বিষনাশে বিশেষ কার্যকর। অম্লনাশক। তাছাড়া দাদ, মেছতার দাগ ও টাকপড়া রোধে, কৃমি রোগ সারাতে, হজমশক্তি বৃদ্ধিতে, পেট ব্যথা দূর করতে ব্যবহূত হয় আকন্দ গাছের ব্যবহার্য অংশ।