নিউজজি প্রতিবেদক ১৩ ফেব্রুয়ারি , ২০২১, ১৫:০০:৪১
সঙ্গীতশিল্পী নীলুফার ইয়াসমিনের জন্মদিন আজ
বিখ্যাত পরিবারের সদস্য তিনি। বোন সাবিনা ইয়াসমিন ও ফরিদা ইয়াসমিন দেশের বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী। তার স্বামী খান আতাউর রহমান কিংবদন্তি নির্মাতা, গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক। আবার একমাত্র সন্তান আগুন, তিনিও জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেতা।
না, এসব পরিচয় দেওয়ার কোনো মানে হয় না। কারণ নীলুফার ইয়াসমিন নিজেই একজন বরেণ্য শিল্পী। বাংলা গানের স্নিগ্ধময়ী সঙ্গীতশিল্পী তিনি। সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য পেয়েছেন একুশে পদকও।
গুণী এই সঙ্গীতশিল্পীর জন্মদিন আজ। ১৯৪৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার শৈশব কেটেছে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ এবং বাংলাদেশের রাজশাহী ও ঢাকায়। তার বাবা-মা ছিলেন সঙ্গীতানুরাগী মানুষ। বাবা নতুন নতুন রেকর্ড কিনে আনতেন শোনার জন্য। সেগুলো তুলে গাইতেন মা। আর মায়ের সহযোগিতায় নীলুফার নিজেও গানগুলো শিখে ফেলতেন।
নীলুফার ইয়াসমিন বাংলাদেশ টেলিভিশনের একজন নিয়মিত শিল্পী ছিলেন। এছাড়া তিনি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রেও গান করেছেন। যেমন- শুভদা, অরুণ-বরুন-কিরণমালা, জোয়ার ভাটা, আবার তোরা মানুষ হ, সুজন সখী, যে আগুনে পুড়ি, জীবন-তৃষ্ণা, জলছবি ইত্যাদি।
নীলুফার ইয়াসমিনের গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- এক বরষার বৃষ্টিতে ভিজে, এতো সুখ সইবো কেমন করে, তোমাকে পাবার আগে, আগুন জ্বলেরে, জীবন সেতো পদ্ম পাতার শিশির বিন্দু, পথের শেষে অবশেষে বন্ধু তুমি, যদি আপনার লয়ে এ মাধুরী, এতো কান্নাই লিখা ছিলো ভাগ্যে আমার, যে মায়েরে মা বলে কেউ ডাকে না, প্রতিদিন সন্ধ্যায়, মাগো আমার যে ভাই, এখনো কেন কাঁদিস ও পাখি, ফুলে মধু থাকবেই, নীল পাখি ওরে, দিওনা দিওনা ফেলে দিওনা।
১৯৯৫ সালে নীলুফার ইয়াসমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগের নজরুল সঙ্গীত বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। মৃত্যুর শেষ দিন পর্যন্ত সেখানেই নিয়োজিত ছিলেন।
শিল্পী হিসেবে নীলুফার ইয়াসমিনের জনপ্রিয়তা শুধু দেশের গন্ডিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বিদেশেও ছিল ব্যাপক। তিনি ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ফ্রান্স, পাকিস্তান ভ্রমণ করেন এবং সঙ্গীত পরিবেশন করে প্রচুর প্রশংসা অর্জন করেন।
বর্ণাঢ্য কেরিয়ারে নীলুফার ইয়াসমিন বাচসাস পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, নজরুল সঙ্গীতে অবদান স্বরূপ নজরুল পদক ও একুশে পদক-সহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছিলেন।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগে নজরুল সঙ্গীতে তার অবদানের কথা চিরস্বরণীয় করে রাখতে তার নামে নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগে পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে।
২০০১ সালের মাঝামাঝি সময়ে নীলুফার ইয়াসমিনের শরীরে টিউমার ধরা পড়ে। অপারেশনের পর কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু ২০০৩ সালের ১০ মার্চ তিনি না ফেরার দেশে চলে যান।
নিউজজি/কেআই